BLANTERVIO103

শৈব নাথযোগী দর্শন ১

শৈব নাথযোগী দর্শন ১
Monday, February 10, 2020
বিদ্বজ্জন মানব শরীরের মধ্যেই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড দর্শন করেন । হৃদয়কমলে অঙ্গুষ্ঠ পরিমিত যে প্রাণ বিদ্যমান তাকেই আত্মা বলা হয় এবং এই আত্মাই পরমেশ্বর শিব নামে অভিহিত ।মানব দেহের মস্তক নামক স্থানটিকে শ্রীশৈল নামক তীর্থস্থান মানা হয় । ললাটে কেদার নাথ প্রতিষ্ঠিত । নাসিকা এবং ভ্রুদ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে কাশীতীর্থ অবস্থিত । স্তনযুগলের মধ্যবর্তী মণ্ডলে করুক্ষেত্রের নিবাস । কমলরূপী হৃদয়ে তীর্থরাজ প্রয়াগ স্থাপিত । হৃদয়ের মধ্য ক্ষেত্রে চিদম্বর তীর্থ বিদ্যমান । মূলাধার স্থানে কমলালয় তীর্থ স্থাপিত আছে । যে ব্যক্তি এইরূপ আত্মতীর্থ ত্যাগ করে বাহ্যিক তীর্থক্ষেত্রে পরিভ্রমণ করতে থাকে , সে হস্তস্থিত বহুমূল্য হীরা পরিত্যাগ করে কাঁচকেই খোঁজ করে । যোগীগণ নিজের দেহস্থিত তীর্থকে অধিক বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা রাখার কারণ জলপূর্ণ তীর্থ এবং প্রস্তরাদি নির্মিত দেব প্রতিমার শরণ করে না । শরীরের অভ্যন্তরে নিবাসকারী প্রদূষিত চিত্ত বাইরের তীর্থজলে ডুব লাগালে পবিত্র হয় না , যেভাবে মদিরাপূর্ণ কলসীর উপর সহস্রবার পবিত্র জল দ্বারা ধৌত করলেও ভেতরে মদিরা থাকার জন্য সে অপবিত্রই থেকে যায় । স্বদেহে নাসিকা এবং ভ্রুযুগলের মধ্যে বারাণসী তীর্থে ভাবনা পূর্বক (ধ্যান) স্নান করে মনুষ্য পবিত্র হয়ে থাকে । এই শরীরেই পরমেশ্বর শিবের পরমাত্ম সত্তা বিদ্যমান আছে । এই পরমাত্মস্বরূপ শিবকে না জানা মূঢ় , অজ্ঞানী মনুষ্য তীর্থ , দান , জপ , যজ্ঞ , প্রস্তর আদি নির্মিত প্রতিমাতে সর্বদা ভগবানকে খুঁজে বেরায় । যোগীগণ নিজের আত্মার মধ্যেই পরমেশ্বর শিবকে দর্শন করেন , প্রস্তরাদি নির্মিত প্রতিমার মধ্যে নয় । অজ্ঞানীগণের হৃদয়ে পরমেশ্বর শিবের প্রতি ভাবনা জাগ্রত করার নিমিত্তই প্রতিমার কল্পনা করা হয়েছে । সুতরাং অষ্টাঙ্গযোগের অভ্যাস দ্বারা আত্মস্থিত পরম শিবকে দর্শন করাই উচিৎ ।
ওঁ নমঃ শিবায় , হর হর মহাদেব ।
Share This Article :

TAMBAHKAN KOMENTAR

7599550894000336510