আর কিছু গুরু কে দেখা যায় পাঁচ বছরের বালক কে দীক্ষা দিচ্ছেন,তিলক পড়াচ্ছেন,জপের মালা দিচ্ছেন।ইসকন মতালম্বীদের দেখি যত্রতত্র যেকোন অবস্থায় কৃষ্ণ নাম জপ করছেন।যেখানে সেখানে মহিলাদের নিয়ে সংকীর্তন করছেন।শুচি-অশুচ
সৃস্টির আদিকাল থেকে পুরুষ-এবং প্রকৃতির মিলন ছাড়া কিছুই সম্ভবপর হয়নি।এই প্রকৃতির শক্তিকেই আমরা আদ্যাশক্তি বা মহামায়ার কৃপা বলছি। আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈশ্বর লাভ।কিন্তু এই ঈশ্বর লাভ খুব সস্তা নয় যা আমরা বুঝিয়ে থাকি।পারমার্থিক
এখন গুরুদেব বা প্রভূরা যখন জপ মালা দেন তখন তারা বলেন পারমার্থিক পথে উন্নতির জন্য এই জপ মালা।এই জপ মালা অনেকে বাজারের থলি হাতে, অনেকে গাড়িতে বসে,অনেকে পথের মধ্যে হেঁটে, অনেকে খেতে বসে জপ করতে থাকেন।উদ্দেশ্য যাতে ইহবন্ধন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।কিন্তু জপমালার মাধ্যমে কিভাবে মুক্তি পাবো তা তাঁরা বলেন না।
আসলে মানুষের মধ্যে যে সর্পাকৃতি "কুলকুন্ডলীনি" শক্তি আছে তার উন্মেষ ঘটিয়ে যদি জীবাত্মা-পরমাত্
১.যোগযুক্ত হওয়া ২.মহামায়ার কৃপা।।
এবার আসি কেন জপমালা তে ১০৮ তথা ১৮ সংখ্যাটি ব্যবহার করা হলো।শুধু জপমালা নয় বরং হিন্দুদের ধর্মীয় শাস্ত্রে ১০৮ বা ১৮ সংখ্যাটির অশেষ গুরুত্ব।তার কিছু উল্লেখ করলাম।
১.শ্রীমদ্ভাগবত গীতায় অধ্যায় সংখ্যা--১৮
২.শ্রীমদ্ভাগবত এর শ্লোক সংখ্যা--১৮০০০
৩.কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের ব্যাপ্তি কাল--১৮ দিন
৪.মহাপুরান এর সংখ্যা--১৮ টি
৫.উপপুরান এর সংখ্যা--১৮ টি
৬.মহাভারতের পর্ব সংখ্যা--১৮ অধ্যায়
৭.কুরুক্ষেত্রে উভয় পক্ষে সৈন্যসংখ্যা ১৮ অক্ষৌহিনী
৯.দূর্গাপূজায় ব্যবহার হয় ১০৮ টি পদ্মফুল
১০.দেবীর গলায় পড়াতে হয় ১০৮ টি বেলপাতার মালা
১১.নারায়ন পূজায় তুলসী লাগে ১০৮ টি
১২.যে কোন যজ্ঞে আহূতী দিতে হয় ১০৮ টি
১৩.জপের মালায় "গুটি" র সংখ্যা ১০৮ টি
১৪.সংস্কৃত বর্নমালায় ৫৪ টি বর্ন রয়েছে।যার প্রতিটিতে "পুরুষ+প্রকৃতি"
১৫.দিবামান কে "যাম" বা "প্রহর"বিবেচনা করে শাস্ত্রীয় কাজ করা হয়।এক প্রহর=১৮০ মিনিট।
১৬.এক " মূহুর্ত" সময় কে অতীত(৩৬)+বর্তমা
১৭.শ্রীকৃষ্ণের নাম ১০৮ টি
১৮.পঞ্চদেবতা(গন
এই এতোকিছুর পিছনে কারন হচ্ছে ১৮ সংখ্যাটি "যোগ" সংখ্যা।যোগযুক্ত
মহামায়ার কৃপা ছাড়া আপনি এই কুলকুন্ডলীনি শক্তিকে জাগাতে পারবেন না।মহামায়ার কৃপা হলে মায়ামুক্ত হয়ে মানুষ "যোগযুক্ত" হতে পারে এবং পরমাত্মা তথা ব্রহ্মের সাথে সংযোগ ঘটাতে পারে।তাই যারা মহামায়া তথা মা দূর্গা,বা কালীকে দাসী বলেন তারা নিকৃষ্ট শ্রেণীর বোকা।কারন আদ্যাশক্তির কৃপা বিনা আরাধ্যকে অর্জন সম্ভব নয়।
কুলকুন্ডলীনিচক্
মহাপ্রভূ শ্রীচৈতন্য ও তঁার " জগন্নাথ অষ্টক" এ এই কুলকুন্ডলীনি শক্তি তথা মহামায়ার মায়া শক্তিকে সমর্থন করে গেছেন।
কাজেই যারা সর্বক্ষন জপমালা যত্রতত্র জপ করে থাকেন এবং যেসব গুরুরা শিষ্যমাত্রই জপমালা দিয়ে থাকেন তারা আসলে অজ্ঞানবশত দেন বা জ্ঞানপাপী।ঠিক ততটাই অজ্ঞান যারা বলেন কৃষ্ণ নাম,হরি নাম,বা আরাধ্যের নাম যত্রতত্র পাঠ করলে বা জপলে আপনি মুক্তিলাভ করবেন।ব্যাপার টা এতো সহজ নয়।
আমাদের সবার মধ্যে মহামায়ার শক্তির উম্মীলন ঘটুক।
Prepared By
সুকান্ত চক্রবর্তী
Emoticon