বলির পক্ষে শাস্ত্রীয় প্রমান
Monday, February 10, 2020
১- "বলিদানং ততঃ পশ্চাৎ কুর্য্যাদ্দেব্যাঃ প্রমোদকম্।
মোককৈর্গজবক্তঞ্চ হবীষা তোষয়েদ্ধরিম।।
তৌর্যত্রিকৈশ্চ নিয়মৈঃ শঙ্করং তোষয়েদ্ধরিম।
চন্ডিকাং বলিদানেন তোষয়েৎ সাধকঃ সদা।।
অর্থাৎ -
[[মূল পুজার পর দেবীর প্রমোদজনক বলি দিতে হবে।কেননা শাস্ত্র উল্লেখ আছে গনপতিকে -মোদক দ্বারা, শ্রীহরি কে ঘৃত দ্বারা,শংকর কে গীতবাদ্যদ্বারা।
আর আদ্যাশক্তি চণ্ডী কে বলি দান দ্বারা সন্তুষ্টি করা যায়।।]]
.
২- "ছাগলাঃ শরভাশ্চৈব নরশ্চৈব যথাক্রমাং।
বলির্মহাবলিরিতিবলয়ঃ পবিকীর্ত্তিকা।।
ততঃ বলিনাং রুধিরং তোয়াসৈন্ধবসৎফলৈ
ঔঁ ঐঁ হ্রীং শ্রীং কৌশিকীতি রুধিরং দাপয়ামি তে।।"
.
অর্থাৎ ‚
.
[[ছাগল,শরভ,মনুষ্যইহারা যথাক্রমে বলি,মহাবলি,অতিবলি হিসেবে প্রসিদ্ধ।।
বিমল খড়্গ দ্বারা বলিচ্ছেদ/শিরচ্ছেদ কর।।
ঔঁ ঐঁ হ্রীং শ্রীং কৌশিকী বলে রুধীর দ্বারা পৃথিবী লাভ কর।]]
.
.
৩ -"আহবেষু মিথোহন্যোন্যং জিঘাংসা মহীক্ষিতঃ যুদ্ধমানাঃ পরং শক্ত্যা স্বর্গ যান্ত্যপরাঙ্মুখা।
যজ্ঞেষু পশবো ব্রক্ষণ হন্যন্তে সততং দ্বিজৈঃ সংস্কৃতাঃ কিল মন্ত্রৈশ্চ তেহপি স্বর্গমবাপ্নুবন্।।"
.
অর্থাৎ‚
.
[[কোন রাজা . অথবা ক্ষত্রিয় যখন যুদ্ধক্ষেত্রে ঈর্ষান্বিত শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ রত হন, মুত্যুর পর তিনি স্বর্গলোকে গমন করেন, তেমনই ব্রাক্ষণ মন্ত্রোচ্চারণ করে যজ্ঞে পশুবলি দিলে স্বর্গ লাভ করেন তেমনি যজ্ঞ আয়জনকারীও দেবতাদের আশীর্বাদ প্রাপ্ত হন ও উচ্চমার্গ লাভ করেন। ]]
.
.
৪-" যজ্ঞার্থং পশবঃ সৃষ্টা স্বয়মেব স্বয়ম্ভুবা।
যজ্ঞোহি ভূত্যৈ সর্ব্বস্য তস্মাদ যজ্ঞে বধোহবধঃ।।
.
অর্থাৎ‚
[[যজ্ঞ সম্পাদনের জন্যই স্বয়ং ব্রহ্ম পশু দিগকে সৃজন করিয়াছেন,,এবং যজ্ঞ সর্ব্ব সাধারণের হিতকল্পে। অতএব যজ্ঞের নিমিত্তে যে পশু বলি হয় তাহা বধ জনিত পাপমুক্ত।]]
-বিষ্ণুসংহিতা
ভগবান মনু বলিতেছেন-অসংস্কৃতান্ পশূন্মন্ত্রৈর্নদ্যাদ্বিপ্র কদাচনঃ।
মন্ত্রৈস্তু সংস্কৃতানদ্যাচ্ছাশ্বতং বিধিমাস্থিতঃ।।
পঞ্চম অধ্যায়-৩৬ নং শ্লোক।
অর্থাৎ- অসংস্কৃত মাংস দ্বিজগণের ভক্ষণ কদাচিত উচিত নহে। সংস্কৃত পশু মাংস ভক্ষণই দ্বিজদিগের কর্তব্য। সংস্কৃত মাংসে বধজনিত দোষাদি থাকে না। ভোগের চরম উৎকর্ষ হইলেই ত্যাগ হইয়া থাকে। পল্লান্ন খাইতে খাইতে পলান্নের ক্ষুদা ও তৃষ্ণা মিটিয়ে গেলে যেমন ঐ পলান্ন প্রতি নিষ্ঠা উঠিয়া অরুচি চলিয়া আসে তদ্রুপ ব্যাপার দেবীর সাধনাতেও ঘটিয়া থাকে। ঔষধ গ্রহণে যেরূপ রোগ দূরীভুত হইয়া যায় আর ঔষুধ গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে না, প্রসাদী দ্রব্যও তদ্রুপ। প্রসাদী দ্রব্য প্রবৃত্তি নাশে সহায়ক। অতএব বিশ্বজননীর কাছে মাতৃভাবের দোহাই দিয়া বলি প্রদান না করিবার যে প্রলাপ ও বিলাপ উহা বুদ্ধিমান ব্যাক্তির সত্ত্বর ত্যাগ করা উচিত। যতদিন না সাধনে চরম উৎকর্ষ না আইসে, চিত্ত যতকাল শুদ্ধ ও নির্ম্মল নাহি হয় ততকাল বাহ্যভূষণে যতই নিরামিষভোজী সাধু সাজিয়া থাক না কেন তাঁহাতে কোন লাভ নাই। চিত্ত নির্ম্মল হইলে দেবী দর্শন প্রদান করেন মাতৃভাব ধরিয়া- দর্শন ও উপলদ্ধি পরে সকল বাহ্যিক আচার ত্যাগ করিলেও কাহার কোন অভিযোগ নাই। কিন্তু সিদ্ধ হইবার আগে সিদ্ধের ভেক ধারণ ধর্মশাস্ত্র বিরুদ্ধ।
Share This Article :
Emoticon