BLANTERVIO103

ইসকনের ভন্ডামি বেইসড ফানি স্টোরি।

ইসকনের ভন্ডামি বেইসড ফানি স্টোরি।
Sunday, April 19, 2020
কাল স্বপ্নে দেখলাম হঠাৎ করে আমি অক্কা পেয়েছি। এবং আমার আত্মাকে শান্তি দেবার জন্য আমার ছেলে এবং মেয়ের জামাই আমার শ্রাদ্ধ তথা অন্তেষ্টিক্রীয়া কর্ম সম্পাদন করছে। যেহেতু এই সমাজ(হিন্দু) কৃৈষ্ণবদের ছত্রছায়ায়  পালিত এবং হিন্দু ঝিংকু পোলাপান এবং মা-মনির দল যেহেতু ধর্ম বিমুখ তাই সকল কৃৈষ্ণব নিয়ম মেনে  আমাকে যথারীতি আর ৫টা সাধারণ হেদুর মতন শেষকৃত্য করা হল এবং সকল কার্য সম্পাদন করা হল।
একজন ধর্ম জানা আত্মা হিসাবে আমি যদিও প্রচন্ড ব্যাথিত হয়েছি কিন্তু কি আর করা উনাদের ইচ্ছায় আমিও সেই অমৃত গোলক বৃন্দাবনের দিকে যাত্রা শুরু করলাম। সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এক এক করে যাচ্ছি।
হঠাৎ গোলকের রাস্তায় দেখলাম ব্যাপক জ্যাম কারণ কে বা কারা উনাদের জীবিত কালের অভ্যাস অনুযায়ী গোলকের রাস্তায়ও বগল তুলে তথাকথিত হরি নাম (কাল্পনিক এবং অশাস্ত্রীয় হরে কৃষ্ণ নাম) শুরু করেছেন। তো পরমেশ্বর ভগবান কৃষ্ণ (!!) এবং ইউনাইটেড স্টেট অব গোলক বৃন্দাবন দ্বারা নিয়জিত পুলিশ বাহিনী বিরক্ত হয়ে একটি রথে করে পে পু , পে পু করতে করতে আসলো । দেখলাম উনাদের ইয়া বিশাল বিশাল লম্বা টিকি তাছাড়া হাতে রয়েছে নিজেদের থেকেও বিশাল এক সাইজের লাঠি আর কপালে হাতে গলায় বুকে পিঠে রয়েছে কৃৈষ্ণবীয় তিলক। আমার চিরকালের প্রশ্ন এত সুক্ষ্য করে ইনারা পীঠের ঠিক মাঝ বরাবর তীলক দেন কিভাবে?? আমি পাপী নগণ্য মানুষ  ,এরমাঝে ঘোর কলির প্রভাবে আমি একমাত্র মুক্তির উপায় কৃষ্ণ নাম নেই নাই। এতে পাপের ঘড়া আরও বেড়েছে। তবে থেংস টু মাই ছেলে-মেয়ে উনারা আমাকে গতি না দিলে আমার কি সাধ্য আছে গতি নেবার। তাই একবার মরার আগে কৃষ্ণ নাম  নিলেই যেমন সকল পাপ কেটে যায় তেমনি মরার পরেও এই কৃৈষ্ণবরা ইউ.এস. জি (ইউনাইটেড স্টেট অব গোলক বৃন্দাবন ) এর টিকেট দিয়ে দেন। আসলেই কি দয়ার শরীর এদের !!
যাইহোক এখনও উনাদের পিঠের বিচিত্র তিলক নামক চিত্রাংকন এর রহস্য অনুধাবণ করতে না পেরে আমি দেখেলাম সেই উন্মাদ বাদরের মতন লম্ফ জম্প করা কৃৈষ্ণবের দলকে ইউনাইটেড স্টেট অব গোলক বৃন্দাবন এর অসাধারণ পুলিশ বাহিনী রাস্তা থেকে উনাদের অতি দক্ষতার সাথে অপসারণ করে আবার লাইনে দাঁড় করালেন। আমিও চলতে চলতে একদম গেটে এসে দাড়ালাম। এখানে সঠিক এবং ১০০% খাঁটী প্রভুপাদীয় মানদণ্ড(!!) দ্বারা  স্বীকৃত একটি মেশিনে সবার বৈষ্ণব থুক্কু কৃৈষ্ণব টেষ্ট করা হচ্ছে। যে যে যত বেশী রাস্তায় রাস্তায় বগল তুলে নেচেছেন আর লাফিয়েছেন এবং মাতাজিদের সাথে দিব্য লীলাখেলায়(!!) মেতেছেন তাঁদের তাঁদের ইউনাইটেড স্টেট অব গোলক বৃন্দাবনে এন্ট্রি দেয়া হচ্ছে এরা ভেতরে গেলে পরম আনন্দ লাভ করবেন , থাকবে সকল সুযোগ সুবিধার ব্যাবস্থা। থাকবে পৃথিবীর মাতাজিরদের থেকেও সুন্দরী সুন্দরী গোপ-গোপীনি। যারা হবে অমৃতের স্বাদ সম। পৃথিবীর মাতাজিদের সাথে দিব্য লীলা করতে যত কষ্ট করা লাগতো এখানে এসব কিছুই নেই। শুধু মুখ দিয়ে বা চিন্তা করলেই হবে। মাতাজি সামনে এসেি দিব্য লীলা শুরু করে দিবে। থাকবে অনন্ত রাসলীলা করার সুবিধা। সে রাস লীলাতে এক একজন ফ্রবু অগনিত মাতাজির সাথে লীলা করবেন। আর সেই লীলার আনন্দ পৃথিবীর ইস্কনের আখড়ার মাতাজিদের থেকেও মধুর হবে। আহা! কি আনন্দ ! হাড়ী কিস্না !
লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বোর হয়ে যাচ্ছিলাম । চিন্তা করলাম জীবনেও তো ইস্কনের মন্দিরে যাইনাই আর সেখানের মাতাজিদের সাথে লীলা তো দূর বিচিত্র বেশভুশা দেখলেই আমি হাসতে হাসতে লূটোপুটি খেতাম। ভাবলাম এখানেই দেখি অল্প সময়ের মাঝে একজন মাতাজির সাথে কথা বলা যায় কিনা। কারণ সেই খাঁটি কৃৈষ্ণব মেশিনে আমি একজন মহা পাপী হবো সন্দেহ নেই। তাই শুরু করলাম মাতাজি খোঁজা ! অনন্ত জলিলের সেই বিখ্যাত মুভি খোঁজ! দ্যা সার্চের মতন আমিও খোঁজ! দ্যা মাতাজি মিশন শুরু করে দিলাম। হঠাৎ এক মাতাজির দেখা পেলাম। মোটামোটি পছন্দও হল। শুরু করলাম বার্তালামঃ
- হাড়ী কিস্না মাতাজি !
-হাড়ী কিস্না ফ্রবু !
- মাতাজির নাম কি?
- নাম দিয়া কাম কি? (ভাব মারার স্বভাব ইউ.এস.জিতে এসেও কমে নাই)
- না ! মানে জিগাই আর কি !
- মিত্রবৃন্দা দেবীদাসি। আমি হলাম শ্রীকৃষ্ণের একান্ত সেবীকা। একান্তে উনি আমার সাথে যা যা লীলা করতে চান সবই করতে পারবেন।
- বাহ বাহ ! অসাধারণ ( মদন বাবুর লাইভের মতন)
-তা মাতাজি ইউনাইটেড স্টেট অব গোলক বৃন্দাবনে আসার আগে কোথায় থাকতেন?
-রাশিয়া ! কেন ফেবুতে হিন্দু গ্রুপগুলাতে দেখতেন না '' রাশিয়ার রাস্তায় চলছে হরি নাম ''??
- মনে করে দেখলাম যুবক থাকাকালীন অবস্থায় আমি একটা ভিডিও দেখেছিলাম বটে । একজন ফ্রবুর হাত ধরে বিকিনি বা ২ পিসে একজন রাশিয়ান ভদ্রমহিলা রাসলীলার মতন নাচছেন ! তাহলে অশিক্ষিত হেদুদের কথাই সত্যি হল। সেই ভিডিও দেখে পাপীর দল কি নিন্দাটাই না করেছিল। পরে ইস্কনকে এসব নিন্দা থেকে বাঁচানোর জন্য অশিক্ষিত মুর্খ হেদুর দল এসে বলেছিলেন। এই মাতাজি একদিন তীলক আর শাড়ী পড়ে রাস্তায় নাচবে। আর এই তোমরাই তখন এর নাচ দেখে পয়সা নাছুড়ে থুক্কু ..... হাড়ি কিস্না না বলে থাকতে পারবে না। বল্লাম আজ্ঞে হ্যাঁ মাতাজি ! চিনতে পেরেছি আপনাকে।
-  মাতাজি  হাস্লেন। আমিও হাস্লাম।
- বললাম মাতাজি কি এখানেও দিব্য লীলার জন্য এসেছেন?
- মানে?
-মানে ইস্কনের আখড়াতে ফ্রবুরা আপনার সাথে লীলা করতেন না? ঠিক সেরকম লীলা এখানেও করবেন?
- দেখেন! আপনি কি বলছেন আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
- কেন ব্রহ্মবইবর্তে দেখেন নাই রাধা কৃষ্ণের দিব্য লীলা !
- কই ! না তো ! আর দেখলেও তখন দিব্য ভাবে হয়তো এড়িয়ে গেছি। আমি তখন কিছু রেফারেন্স দিতেই মাতাজির ফর্সা মুখ লাল হয়ে গেল। উনি হালকা লজ্জা পেলেন।
- এবার বললাম আচ্ছা ! এই যে কৃষ্ণ কৃষ্ণ করে লাফালেন সারা জীবন আপনি কি জানেন কৃষ্ণ উনার সারা জীবনে কোথাও নিজেকে ঈশ্বর দাবী করেন নাই। বরং অর্জুনের ভুল ভাঙ্গানোর জন্য বলেছেন উনি নিজেকে যে বার বার আমি আমি বলে সম্বোধন করতেন সেই আমি উনি নিজে নন বরং যোগযুক্ত হয়ে ব্রহ্ম বানী করতেন। যেরকম আদি শংকর , বামাক্ষেপা , রামকৃষ্ণ করতেন।
- আপনি কে হে মশাই ! এইখানে এসেও পৃথিবীর পাপিষ্ঠদের মতন কথা বলছেন। সামনেই দেখতে পাচ্ছেন এতো প্রমান। ইউনাইটেড স্টেট অব গোলক বৃন্দাবন  সামনেই আছে। মানে আমাদের (কৃৈষ্ণবদের) করা সকল বানী সত্য । এরপরেও এসব কি বলছেন?? আচ্ছা আপনি কি ব্রাহ্মণ নাকি শৈব ??
- আজ্ঞে আমি শৈব ! পরমেশ্বর শিবের ভক্ত। যার উপাসনা কৃষ্ণ বার বার করেছেন।
- কি বললি পাপিষ্ঠ ! এত্তবড় কথা ?? পরম বৈষ্ণব শিব এর উপাসনা করবেন আমার প্রাণ গোবিন্দ !!! ?? দাড়া ! তোর আজকে খবর করবো !
- আহা রাগ করছেন কেন?
-রাগ করবো না? তুই কি গীতা পড়িস নাই?
- কেন নয়? তবে তা যোগ গ্রন্থ হিসাবে। ব্রহ্ম বানী হিসাবে। এখানে কৃষ্ণ নন। ব্রহ্ম বলছেন সব। এমনকি কৃষ্ণ কোন যোগে আবিষ্ট হয়ে এই জ্ঞান দান করেছেন তাও বলতে পারবো।
- অরে মহা মুর্খ ! গীতাই তো সর্বোচ্চ গ্রন্থ !
- তাহলে গীতার আগে ধর্ম ছিল না? গীতা তো মহাভারত যুগের। এর আগে কি ধর্মগ্রন্থ ছিল না? তাছাড়া গীতার লেখক হলেন গনেষ আর বলেছিলেন বেদব্যাস ! তাহলে এটা ধর্মগ্রন্থ হয় কি করে? গীতায় শ্লোক থাকে আর বেদে মন্ত্র থাকে তাহলে শ্লোক এবং মন্ত্রের পার্থক্য বুঝেও গীতা প্রধান ধর্মগ্রন্থ হয় কি করে? গীতা ৪২ এর উপরে। যে গীতা নিয়ে আপনারা লাফিয়েছেন সেটার থেকেও উচ্চ দর্শনের গীতা আছে। সেটা জানেন কি? আদি শংকর একে প্রস্থানত্রয়ীতে স্থান না দিলে এই গীতাও আর ৫টা গীতার মতন হতো। তাছাড়া যে রাধাকে আপনারা পূজা করেন সেই রাধার অস্তিত্ব মহাত্মা কৃষ্ণের জীবনিতে নেই। এমনকি আপনাদের যে দিব্য কিতাব ভাগবত সেখানেও নেই।
- তবে রে পাপিষ্ঠ  ! তোর শেষ আমি করবো ! তুই বড্ড বেড়ে গেছিস। ফেবুতেও নাকি কীর্তনের পেজে গিয়ে হা হা মারিস। দেখ আমার বিশ্বরূপ !!
বলতেই আমি দেখলাম মাতাজির নীল রঙের শাড়ী, পেছনে কৃৈষ্ণবদের শেষ নবী আচার্য্য ভক্তি বেদান্ত(!!) শ্রীমৎ স্বামী ফ্রবুফাদের ছবি, তাছাড়া নাম জানা কত দাসদের ছবি !
মাতাজি আমার চোখের সামনে ষড়ভূজা রূপ ধারণ করলেন, উনার ডান হাত(গুলোর) সবার উপরে রয়েছে কীর্তনের করতাল , মধ্যখানে রয়েছে ভিক্ষার ঝুলি টাইপের কি যেন একটা !!! মনে পড়ছে না নামটা ...... অহ হ্যাঁ ! জপের থলি , আর সবার নীচের হাতে রয়েছে ফ্রবুর সাথে দিব্য লীলার ফলাফল (বুঝে নিন ;) )
বাম হস্তের সবার উপরে রয়েছে তিলকদানী , এরপরের হাতে (মধ্যখানে) রয়েছে  ১০০% খাঁটী প্রভুপাদীয় মানদণ্ড(!!) দ্বারা  স্বীকৃত ভগবত গীতা যথাযথ , আর  সবার নীচে রয়েছে অপ্রাকৃত কৃষ্ণ প্রসাদ রান্নার জন্য ডালের হাতা।
এই বিশেষ রূপ দেখে আমি অতীশয় ভয়ার্ত হয়ে হুট করে স্বপ্ন থেকে জেগে উঠলাম। বিছানায় বসে বসে তউবা করলাম যে আর কখনও ইস্কনীদের নিয়ে মজা করবো না। কৃষ্ণ হলেন সকল জ্ঞানের উর্ধ্বে । উনাকে যুক্তি দিয়ে জানতে গেলে হাজার হাজার অজানা প্রশ্ন আসবে যার উত্তর নেই। বরং উল্টো মাতাজিদের ভালবাসা আর ফ্রবুদের চোখ রাঙ্গানী খেতে হবে এমনকি মারও খাওয়া লাগতে পারে।
পরিশেষে একটি কৌতুক দিয়ে শেষ করিঃ আমি আজকে থেকে ইস্কনী হলাম !

Share This Article :

TAMBAHKAN KOMENTAR

7599550894000336510