BLANTERVIO103
Thursday, April 30, 2020


ওঁ তৎ সৎ

♦ ‍ শ্রীকৃষ্ণই ঈশ্বর আর কেহ নয়

----আপনি কি পবিত্র বেদ গীতা কখনো বুঝে পড়েছেন?
আশাকরা যায় যদি পড়ে থাকতেন তাহলে এমন মন্তব্য করিতেন না-

♦ শ্রীকৃষ্ণ কি ঈশ্বর? গীতা কি বলে?

★উত্তর:- না
 কেননা সে ঈশ্বর হলে অর্জুনকে কোন ঈশ্বরের উপাসনা করতে বলছে?

( গীতা ১৮/৬১-৬২) শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণজী বলছেন --> হে অর্জুন ঈশ্বর সকলকে মায়ার দ্বারা যন্ত্রের ন্যায় সকলকে জীবজগতে ভ্রমন করাইতেছে তুমি শুধু তারই উপাসনা করো তিনি সকলের মোক্ষদাতা তার উপাসনা করে তুমি পরমপদ মোক্ষ প্রাপ্ত হইবে।


♦ তাহলে ঈশ্বর কে?  প্রমান কি ?

★উত্তর :- ঈশ্বর একমাত্র ওঁ আর কেহ নয় :-
প্রমান:- ওঁ খং ব্রহ্ম ( যজুর্বেদ ৪০/১৭) অর্থ:- ওঁ ই একমাত্র ঈশ্বর।


♦তাহলে শ্রীকৃষ্ণজে গীতায় অনেক জায়গায় বলেছে আমার শরন লও তার কি হবে?

★উত্তর:- হ্যা বলেছে তবে সেটা সঠিক ভাবে বুঝতে হবে-
যেমন :- গীতা ১৮/৬৬ তে বলেছে

 সর্ব ধর্মান পরিত্যাজ্য মামেকং শরনং ব্রজ অহং তাং সর্ব পাপেভ্য মোক্ষয়ী শামিমা সূচ।

অর্থ:- সকল ধর্ম পরিত্যাগ করিয়া কেবল আমারি শরন লও আমি তোমাকে সকল পাপ হতে মুক্তি প্রদান করিব।

কিন্তু এখানে শ্রীকৃষ্ণ তার নিজের উপাসনা করতে বলেনি শ্রীকৃষ্ণ যোগস্হ অবস্হাতে এই বানী দেন।
 অতএব এটা ঈশ্বরের বানী শ্রীকৃষ্ণের বানী নয়। এই বানীটা শ্রীকৃষ্ণ যখন যোগস্হ হন তখন তার মাধ্যমে ঈশ্বর অর্জুনকে দেন।


♦ শ্রীকৃষ্ণ যে যোগী ছিলো তার প্রমান কি?

★উত্তর:- শ্রীকৃষ্ণ যোগী ছিলো সেটা পবিত্র গীতাতেই উল্লেখ আছে বহূ জায়গায় যেমন পবিত্র গীতার ৭০০ শ্লোকের অন্তিম শ্লোক তাথা ( গীতা ১৮/৭৮) এখানে শ্রীকৃষ্ণকে যোগেশ্বর বলা হয়েছে মানে যোগ + ঈশ্বর  মানে যোগীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।


♦ মানলাম কিন্তু তিনি যে (গীতার ৪/৫-৮) শ্লোকে বলেছেন
১/ তিনি পূর্বজন্মের সকল কথা মনে রাখতে পারেন।
২/ তিনি দুষ্টদের বিনাশে অবতীর্ণ হন।

এটা সাধারন মানুষ কিকরে পারে তিনি যদি ঈশ্বই না হন ?

★উত্তর:- ১/ - প্রথমত একজন যোগীর কাছে বিশেষকরে শ্রেষ্ঠ যোগীর কাছে পূর্বজন্মের কথা মনেকরা তেমন বিষয় নয় - তবুও আমি কিছু প্রমান দেবো যেমন:-

য়েনেদং ভূতং ভুবনং ভবিষ্যৎপরিগৃহীতমমৃতেন সর্বম্।
য়েন য়জ্ঞস্তায়তে সপ্তহোতা তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু।।”
যজুর্বেদ ৩৪।৪
অনুবাদ- “হে জগদীশ্বর! যদদ্বারা যোগীগণ ভূত, ভবিষ্যৎ ও বর্তমান কার্য জানিতে পারেন, যাহা অবিনাশী জীবাত্মাকে পরমাত্মার সহিত মিলিত করিয়া সর্বপ্রকারে ত্রিকালজ্ঞ করে, যাহাতে জ্ঞান ও ক্রিয়া আছে, যাহা পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয়, বুদ্ধি ও আত্মার সহিত সংযুক্ত এবং যা দ্বারা যোগীগণ যোগরূপে যজ্ঞের বৃদ্ধি সাধন করেন, আমার মন সেই যোগবিজ্ঞান সম্পন্ন হইয়া অবিদ্যাদি ক্লেশ হতে দূরে থাকুক।

২/- দ্বিতীয়ত একটি মুক্ত আত্নার কাছে নিজ ইচ্ছাই দেহধারন বা জন্ম নেওয়া বা অবতীর্ণ হওয়া তেমন কোন বিষয় নয়। প্রমান:-  ( বেদান্তসূত্র ৪/৪/১১) মতে মুক্ত আত্মা স্ব ইচ্ছাই দেহধারন করতে পারে।

আবার (বেদান্ত সূত্র ৪/৪/৮) মতে মুক্ত আত্মা তার সংকল্প সিদ্ধ করতে পারে।

এবং ( বেদান্ত সূত্র ৪/৪/৯) মতে মুক্ত আত্মা স্বাধীন ও সতন্ত্র।

আশাকরি অবশ্যয় শ্রীকৃষ্ণজী একটা মুক্ত আত্মা কেননা সেটা না হলে (গীতা ৪/৬)  জন্ম রহিত বিষয়টি ভূল প্রমানিত হয়।


♦ আচ্ছা মানলাম তিনি মুক্ত আত্মা - আচ্ছা এবার বলুন একজন মুক্তআত্মা বা যেগী কিকরে বিশ্বরূপ দেখায়  এটা কি মোটেও সম্ভব?

★উত্তর :- অসম্ভবের কি হলো? 
যেমন:- ছান্দোগ্য উপনিষদে সনৎকুমার
তাঁর শিষ্য নারদকে বলেছেন-

অহমেবাধস্তাদহমুপরিষ্টাদহং
পশ্চাদহং পুরস্তাদহং
দক্ষিণতোহহমুত্তরতোহহমেবেদং
সর্বমিতি।   (ছান্দোগ্যোপনিষদ ৭/২৫/১)

অর্থ: আমিই অধো ভাগে, আমি উর্ধ্বে, আমি পশ্চাতে, আমি সম্মূখে, আমি দক্ষিণে, আমি উত্তরে-আমিই এই সমস্ত।

তৈত্তিরীয় উপনিষদে বলা হয়েছে –

অহং বৃক্ষস্য রেরিবা। কীর্তিঃ পৃষ্ঠং গিরেরিব। উর্ধ্বপবিত্রো বাজিনীব স্বমৃতমস্মি। দ্রবিণং সবর্চসম্। সুমেধা অমৃতোহক্ষিতঃ। ইতি ত্রিশঙ্কোর্বেদানুবচনম্।।

(তৈত্তিরীয় উপনিষদ– শীক্ষাবল্লী ১০ম অনুবাক।)

অর্থ: আমি সংসার বৃক্ষের উচ্ছেদক, আমার কীর্তি পর্বতের শিখরের মতো উন্নত। অন্নোৎপাদক শক্তিযুক্ত সূর্য যেরূপ অমৃতের মতো, আমিও সেরূপ। আমিই ধনের ভাণ্ডার, আমিই শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিসম্পন্ন, আমিই অমৃত– এরূপ ঋষি ত্রিশঙ্কুর অনুভূত বৈদিক বচন।

এবার বলুন তাহলে এরা কি ঈশ্বর?


♦ মহাশয় এবার বলুন বিশ্বরূপ কি মানুষের না ঈশ্বরের ? সহজ ভাবে বললে বিশ্বরূপ কি মানুষের হয় না ঈশ্বরের? তাহলে শ্রীকৃষ্ণ দেখালো কিভাবে?

★উত্তর :- আমি পূর্বেই বলিয়াছি এবং প্রমান করিয়াছি শ্রীকৃষ্ণ একজন যোগী পুরুষ অতএব তিনি যোগধ্যানের মাধ্যমে ঈশ্বর থেকে বিশ্বরূপ দেখিয়েছে-

 বিশ্বরূপটা মূলত ঈশ্বরের --
তবে যার মাধ্যমে বা যে যোগীর মাধ্যমে বিশ্বরূপ দেখানো হয় সেটা বিশ্বরূপ উপস্হাপনের শুধু একটা মাধ্যম মাত্র।


♦আচ্ছা তাহলে গীতায় প্রায় জায়গায় কেন লেখা (শ্রীভগবান উবাচ) মানে শ্রীকৃষ্ণকে ভগবান বলা হচ্ছে ?

★উত্তর :- ৬ গুন সম্পন্ন ব্যাক্তিকেই ভগবান বলা যেতে পারে সেই ৬ টি গুন মূলত ( রূপ / যশ / ঐশর্য্য / বীর্য / খ্যাতি ও বৈরাগ্য) 
যেমন :- ভিভিন্ন উপনিষদে  শিষ্য তার গুরুকে ভগবান বলে ডেকেছে প্রমান স্বরূপ এই রেফারেন্স গুলো দেখতে পারেন--> প্রশ্ন উপনিষদ ২।১, ৩।১, ৪।১, ৫।১ ও ৬।১ মুণ্ডক_উপনিষদ্ ১।১।৩ তৈত্তিরীয়_উপনিষদ্ ৩।১-৫ ছান্দোগ্য উপনিষদ ১।১১।৩,৪,৬ও৮
© Utsho Kumar Saha
Share This Article :

TAMBAHKAN KOMENTAR

7599550894000336510