BLANTERVIO103

আর কে কে বিশ্বরূপ দেখিয়েছেন

আর কে কে বিশ্বরূপ দেখিয়েছেন
Wednesday, April 29, 2020
শ্রীকৃষ্ণ_ব্যতিত_আর_­কোন_কোন_ঋষি যোগবলে­
বিশ্বরুপের_জ্ঞান_দা­ন_করেছেন??
কয়েকটা মানুষের একটা কেমন যুক্তি শ্রীকৃষ্ণ বিশ্বরুপ দর্শন দেখিয়েছেন আর কেউ সেরকমটা পেরেছে কি??
উত্তর হল, হ্যাঁ অবশ্যই। বরং সেরকম একজন নন বহু ঋর্ষি বিশ্বরুপের কথা বলেছেন যোগস্থ অবস্থায়৷ পৌরাণিক কাহিনী ব্যতিতই তার রেফারেন্স নিচে দেয়া হল। আশা করি দেখে মনের প্রশ্নের শঙ্কা মিটবে অনেকেরই।
অহং রুদ্রেভির্বসুভিশ্চরা­ম্যহমাদিত্যৈরুত বিশ্বদেবৈঃ।
অহং মিত্রাবরুণোভা বিভর্ম্যহমিন্দ্রাগ্ন­ী অহমশ্বিন্যেভা।।
ঋগবেদ ১০/১২৫/১
অর্থ: আমি বাক্-আমব্রীনী, অসীম জ্ঞানের কন্ঠস্বর, মহাবিশ্বের বাক্, (আমি) ১১ রুদ্র, ৮ বসু, ১২ আদিত্য এবং সকল বিশ্বদেবগনের সহিত সকল
কিছু বহনকারী ও একই সঙ্গে বিদ্যমান৷ আমি মিত্র ও বরুন (দিবস ও রাত্রি) উভয়ের
সাথে ব্যাপ্ত ও ইহাদের ধারন করি৷ আমি ইন্দ্র ও অগ্নি (বাতাস ও আগুন) উভয়ের সহিত ব্যাপ্ত ও ইহাদের ধারন করি৷ আমি অশ্বিনীদ্বয়কে বহন করি ও ধারন করি৷
.
এটি ঋগ্বেদের বিখ্যাত দেবী সূক্তের প্রথম মন্ত্র। যার দ্রষ্টা হচ্ছেন ঋষি অম্ভৃণের কন্যা বাক। এই সূক্তে ৮ টি মন্ত্র রয়েছে এবং প্রতিটিতেই আমি শব্দটি রয়েছে। ফলে এখানে "আমি" শব্দ দ্বারা মন্ত্রের বক্তাকেই ঈশ্বর মানলে ঋষিকা বাককে ঈশ্বর হিসেবে মানতে হবে।
.
এবার উপনিষদ হতে দেখে নেই আমি দ্বারা ঋষিকে বক্তা হিসেবে মানলে কী হবে।
.
ছান্দোগ্য উপনিষদে সনৎকুমার
তাঁর শিষ্য নারদকে বলেছেন-
"....অহমেবাধস্তাদহমু­পরিষ্টাদহং
পশ্চাদহং পুরস্তাদহং
দক্ষিণতোহহমুত্তরতোহহ­মেবেদং
সর্বমিতি।।"
.
ছান্দোগ্যোপনিষদ ৭।২৫।১.
অর্থ: আমিই অধো ভাগে, আমি উর্ধ্বে, আমি পশ্চাতে, আমি সম্মূখে, আমি দক্ষিণে, আমি উত্তরে-আমিই এই সমস্ত।
তাহলে এখানে সনৎকুমারকে ঈশ্বর হিসেবে মানতে হবে।
আবার তৈত্তিরীয় উপনিষদে বলা হয়েছে –
অহং বৃক্ষস্য রেরিবা। কীর্তিঃ পৃষ্ঠং গিরেরিব। উর্ধ্বপবিত্রো বাজিনীব স্বমৃতমস্মি। দ্রবিণং সবর্চসম্। সুমেধা অমৃতোহক্ষিতঃ। ইতি ত্রিশঙ্কোর্বেদানুবচন­ম্।।
তৈত্তিরীয় উপনিষদ– শীক্ষাবল্লী ১০ম অনুবাক।
অর্থ: আমি সংসার বৃক্ষের উচ্ছেদক, আমার কীর্তি পর্বতের শিখরের মতো উন্নত। অন্নোৎপাদক শক্তিযুক্ত সূর্য যেরূপ অমৃতের মতো, আমিও সেরূপ। আমিই ধনের ভাণ্ডার, আমিই শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিসম্পন্ন, আমিই অমৃত– এরূপ ঋষি ত্রিশঙ্কুর অনুভূত বৈদিক বচন।
তাহলে এখানে ত্রিশঙ্কু ঋষিকে ঈশ্বর বলে গণ্য করতে হয়। তৈত্তিরীয় উপনিষদে আরও আছে–
হা৩বু হা৩বু হা৩বু।
অহমন্নমহমন্নমহমন্নম্­। অহমন্নাদো৩হহমন্নাদো৩­হহমন্নাদঃ। অহং শ্লোককৃদহং শ্লোককৃদহং শ্লোককৃহং শ্লোককৃৎ। অহমস্মি প্রথমজা ঋতা৩স্য। পূর্বং দেবেভ্যোহমৃতস্য না৩ভায়ি। যো মা দদাতি স ইদেব মা৩বাঃ। অহমন্নমন্নমদন্তমা৩দ্­মি। অহং বিশ্বং ভুবনমভ্যভবা৩ম্।। সুবর্ণ জ্যোতীঃ য এবং বেদ। ইত্যুপনিষৎ।।
তৈত্তিরীয় উপনিষদ–ভৃগুবল্লী ১০ম অনুবাক।
অর্থ: আশ্চর্য! আশ্চর্য! আশ্চর্য! আমি অন্ন, আমি অন্ন, আমি অন্ন। আমি অন্ন ভোক্তা, আমি অন্ন ভোক্তা, আমি অন্ন ভোক্তা। আমি সংযোগকারী, আমি সংযোগকারী, আমি সংযোগকারী। আমি সত্যের অর্থাৎ প্রতক্ষ্য জগত অপেক্ষা সর্ব প্রধান ও সর্ব প্রথম উৎপন্ন এবং দেবতাগণ হতেও পূর্বে বিদ্যমান অমৃতের কেন্দ্র হচ্ছি আমি। যে কেউ আমাকে অন্ন দেয় সে কার্য দ্বারা আমার রক্ষা করে। আমিই অন্নস্বরূপ হয়ে অন্ন ভক্ষণকর্তাকে ভক্ষণ করি। আমি সমস্ত ব্রহ্মাণ্ডকে অভিভূত করি। আমার প্রকাশের এক ঝলক সূর্যের ন্যায়। যে এরূপ জানে সেও স্থিতি লাভ করে। এরূপ এই উপনিষদ সমাপ্ত।
তাহলে গীতায় যদি শ্রীকৃষ্ণ "আমি" বলাতে তিনি ঈশ্বর হন, তবে বেদের ঋষিকা বাক ও উপনিষদের ত্রিশঙ্কু ঋষি ও ঋষি সনৎকুমারও ঈশ্বর হবেন। যা সনাতন ধর্মের একেশ্বরবাদের বিপরীত।
এখন এর সমাধান হচ্ছে, উপরের সকলে যোগ যুক্ত অবস্থায় ছিলেন। ফলে যোগী ওই সময় যা বলেছেন সেগুলো তাঁদের কথা নয় স্বয়ং ঈশ্বরের কথা। অর্থাৎ ওইসব স্থানে "আমি" দ্বারা ঈশ্বর বুঝতে হবে।
#পরিশেষে_সনাতনধর্মে_­যোগস্থ হওয়ার বিষয়টা একেবারেই অতি বাস্তবিক আধুনিক কালেও দু'এক জন সেরুপ হয়েছেন।।
Share This Article :

TAMBAHKAN KOMENTAR

7599550894000336510