BLANTERVIO103

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের দ্বিতীয় সঙ্ঘাধ্য়ক্ষ গুরুজী গোলওয়ালকরের জন্মদিন।

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের দ্বিতীয় সঙ্ঘাধ্য়ক্ষ গুরুজী গোলওয়ালকরের জন্মদিন।
Thursday, April 30, 2020
 আপনারা কি জানেন, RSS -এর এই সর্বোচ্চ নেতাকে নির্মাণ করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ-পার্ষদ এক সন্ন্যাসী?

শ্রীরামকৃষ্ণ-পার্ষদ স্বামী অখণ্ডানন্দজী (১৮৬৪–১৯৩৭)-র মন্ত্রদীক্ষার প্রবল প্রভাব পড়েছিল নাগপুর কেন্দ্রিক মহারাষ্ট্রে। ১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। ১৯২৮ সালে স্বামী ভাস্করেশ্বরানন্দ (বিপ্রদাস মহারাজ)-কে ভুবনেশ্বর মিশন থেকে তুলে মঠাধ্যক্ষ করে পাঠানো হল নাগপুরে। সেখানে তিনি নাগপুরবাসী বিশেষ করে ছাত্র ও যুব-সম্প্রদায়ের মধ্যে শ্রীরামকৃষ্ণ ও স্বামীজির ভাবধারা প্রচার করতে শুরু করলেন। ভাস্করেশ্বরানন্দজীর উদ্যোগে মারাঠি ভাষায় প্রকাশিত হল মাসিক পত্রিকা ‘জীবন বিকাশ’।

স্বামী ভাস্করেশ্বরানন্দের মাধ্যমে বহু মারাঠি দেশপ্রেমী যুবক জানতে পারলেন শ্রীরামকৃষ্ণ-পার্ষদ ও মঠাধ্যক্ষ স্বামী অখণ্ডানন্দের নাম; জানলেন মাধবরাও সদাশিব গোলওয়ালকরও। উচ্চশিক্ষিত গোলওয়ালকর সেই সুবাদে নাগপুর মিশনে নিয়মিত আসতে শুরু করলেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে আলাপ হল যুবক ব্রহ্মচারী আনন্দচৈতন্যের (অমিতাভ মহারাজ, সন্ন্যাস নাম স্বামী অমূর্তানন্দ)। ইনি ১৯১৭ সাল থেকে ১৯২৩ সাল পর্যন্ত সারগাছিতে স্বামী অখণ্ডানন্দের সেবক ছিলেন, ১৯২৭ সালে তিনি নাগপুর আশ্রমে যান। এই অমিতাভ মহারাজে কাছ থেকে গোলওয়ালকর জানতে পারলেন প্রচার বিমুখ এক অন্তর্মুখী সাধু তথা ঠাকুর-মা-স্বামিজীর অতি প্রিয়পাত্র ‘গঙ্গাধর মহারাজ’ (স্বামী অখণ্ডানন্দের পূর্বাশ্রমের নাম) বর্তমানে মুর্শিদাবাদ জেলার সারগাছি গ্রামে অবস্থান করছেন এবং একনিষ্ঠ সেবাব্রতে নিবৃত আছেন।

গোলওয়ালকর তখন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের কার্যবাহ, ইতোমধ্যে সফলভাবে সামলেছেন আকোলাতে অনুষ্ঠিত আধিকারিকদের জন্য প্রশিক্ষণ বর্গ; যেমন বক্তব্য তেমনই তাঁর লেখনী। আরও অনেক বড় দায়িত্ব গোলওয়ালকরকে দেবেন ভেবে রেখেছেন প্রথম সরসঙ্ঘচালক ডাক্তারজী। কিন্তু বলা নেই, কওয়া নেই বাড়ি থেকে পালিয়ে, ডাক্তারজীকেও না জানিয়ে গোলওয়ালকর ভীড়লেন শ্রীরামকৃষ্ণ-পার্ষদ রূপ এক মাস্তুলে, নোঙর ফেললেন সারগাছির পবিত্র আশ্রমে। ডাক্তারজী উদ্বিগ্ন। ২৩শে জানুয়ারি, ১৯৩৭ সালে একটি চিঠিতে নাগপুরের সদাশিব থমব্রে-কে স্বামী অখণ্ডানন্দজী জানাচ্ছেন তাদের কুশল সংবাদ।

স্বামী অখণ্ডানন্দ নিজে একটি চিঠিতে সম্ভবত গোলওয়ালকরের সেবাকর্মের উল্লেখ করেছেন, “অমূল্য (স্বামী শঙ্করানন্দ, ১৮৮০ — ১৯৬২, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের সপ্তম অধ্যক্ষ) ৮ দিন Infuenza-য় ভুগিয়া কয়দিন পথ্য পাইয়াছে।..নাগপুর হইতে একটি ছেলে আসিয়া সকল রকমে তার কত সেবাই না করিতেছে।” চিঠিটি স্বামী অখণ্ডানন্দ লিখেছিলেন ১৩ অক্টোবর, সোমবার ১৯৩৬ সালে, প্রাপক ছিলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, পরে যিনি স্বামী নিরাময়ানন্দ (১৯১১ — ১৯৮৪) নামে পরিচিত হয়েছিলেন এবং উদ্বোধন পত্রিকার সম্পাদক এবং মনসাদ্বীপ, চেরাপুঞ্জি, আসানসোল, যোগদ্যান ও বোম্বাই মিশনের প্রধান হয়েছিলেন।
জানা যায়, বহু মারাঠি যুবককে স্বামী অখণ্ডানন্দজী পত্রে ও সাক্ষাতে যে উপদেশ দিয়েছিলেন তার নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখতেন গোলওয়ালকর। স্বামী অখণ্ডানন্দ নাগপুর মঠের অধ্যক্ষ স্বামী ভাস্করেশ্বরানন্দকে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রয়োজনমত নাগপুরের মারাঠি দেশপ্রেমী যুবকদের মানসিক ও শরীরিক উৎকর্ষতার পরামর্শ দিতে।
Share This Article :

TAMBAHKAN KOMENTAR

7599550894000336510